সুনামগঞ্জে অভিনব কর্মসূচি
‘ক্লিন এনার্জি’র নামে ভুয়া প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ বন্ধের দাবি
- আপলোড সময় : ২৪-১০-২০২৪ ১২:২৪:৫৯ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ২৪-১০-২০২৪ ১২:২৪:৫৯ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার ::
নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং “ক্লিন এনার্জি”র নামে ভুয়া প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ বন্ধের দাবিতে সুনামগঞ্জে এক অভিনব প্রচারাভিযান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে ওয়ার্ল্ড ব্যাংক গ্রুপ এবং ইন্টারন্যাশনাল মনেটারি ফান্ডের বার্ষিক সভার প্রাক্কালে হাওর এরিয়া আপলিফটমেন্ট সোসাইটি-হাউস, কোস্টাল লাইভলিহুড এন্ড এনভায়রনমেন্টাল একশন নেটওয়ার্ক-ক্লিন এবং বাংলাদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপ অন ইকোলজি এন্ড ডেভেলপমেন্ট - বিডব্লিওজিইডি এ কর্মসূচির আয়োজন করে। বুধবার সকাল ১১টায় সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার কালনার হাওরে অনুষ্ঠিত উক্ত প্রচারাভিযানের মূল লক্ষ্য বিশ্বব্যাংকের নীতিনির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা এবং তাদের নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ বাড়ানোর দাবি জানানো।
কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা দাবি করেন, ওয়ার্ল্ড ব্যাংককে সৌর, বায়ু, এবং অন্যান্য কম-কার্বন প্রযুক্তির মতো প্রকৃত নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ করতে হবে। তারা জীবাশ্ম জ্বালানি বা তথাকথিত “ক্লিন এনার্জি” প্রযুক্তি যেমন কার্বন ক্যাপচার ও স্টোরেজ প্রকল্পগুলো থেকে সরে আসার আহ্বান জানান। এই প্রকল্পগুলোকে তারা ভুয়া প্রযুক্তি হিসেবে উল্লেখ করেন, কারণ এগুলো জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন রোধে টেকসই সমাধানের জন্য বিশ্বব্যাংকের উচিত নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ বাড়ানো।
হাওরের জলবায়ু কর্মীরা নানান রঙের ব্যানার এবং প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে একটি ভিন্নধর্মী আয়োজনে অংশ নেন। তাদের ব্যানারে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি ছিলো এবং প্যারিস চুক্তির আলোকে শুধুমাত্র নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগের আহ্বান জানানো হয়। বক্তারা বিশ্বব্যাংকের বর্তমান বিনিয়োগ নীতির সমালোচনা করেন, যা এখনও কিছু পুরনো এবং অকার্যকর প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করছে। তারা উল্লেখ করেন, জলবায়ু পরিবর্তনের লক্ষ্য অর্জনে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমাতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া আবশ্যক এবং সেটা সম্ভব হবে একমাত্র নবায়নযোগ্য এনার্জিতে বিনিয়োগের মাধ্যমে।
সুনামগঞ্জ জনকল্যাণ সংস্থা - সুজনের নির্বাহী পরিচালক নির্মল ভট্টাচার্য বলেন “ওয়ার্ল্ড ব্যাংক জীবাশ্ম জ্বালানিতে আর বিনিয়োগ না করার কথা বললেও, তারা এখনো রূপসা ৮০০ মেগাওয়াট এবং সিদ্ধিরগঞ্জ ৩৩৫ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্রে কয়েক মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করছে।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “ওয়ার্ল্ড ব্যাংক বর্তমানে এমন কিছু প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করছে যার কার্যকারিতা এখনো প্রমাণিত নয়। যেমন এনার্জি মিক্স এবং কার্বন ক্যাপচার প্রযুক্তি। এসব প্রযুক্তি জলবায়ু পরিবর্তন রোধে তেমন কার্যকরী নয়। বরং নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ বাড়ানোই হচ্ছে একমাত্র দীর্ঘমেয়াদী সমাধান।”
আয়োজকরা বিশ্বব্যাংক এবং আইএমএফের প্রতি আহ্বান জানান যেন তারা তাদের বিনিয়োগ নীতিমালা পুনর্বিবেচনা করে। বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোতে নবায়নযোগ্য এবং টেকসই জ্বালানিতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করে। বক্তারা দাবি করেন, টেকসই উন্নয়ন ও জলবায়ু ন্যায়বিচারের জন্য নবায়নযোগ্য জ্বালানির বিকাশ অপরিহার্য, এবং বিশ্বব্যাংকের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর উচিত নিজেদের নীতিগুলোকে সেই অনুযায়ী পরিবর্তন করা।
এই প্রচারাভিযানে অংশ নেন সুশীল সমাজের সদস্য, কৃষক, শিক্ষার্থী, স্বেচ্ছাসেবক এবং জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন স্তরের মানুষ। এতে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সুজনের নির্বাহী পরিচালক নির্মল ভট্টাচার্য, হাউসের নির্বাহী পরিচালক সালেহিন চৌধুরী শুভ, পরিবেশ ও উন্নয়নে তারুণ্যের সভাপতি ফারুক আহমদ, বাংলাদেশ যুব জোট জেলা কমিটির সাধারণ স¤পাদক শরীফ আহমদ প্রমুখ।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ